তারা বলছেন, দুই উপায়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ হ্রাস পেতে পারে। প্রথমত ওষুধ ছিটিয়ে এডিস মশা নিধন ও লার্ভা ধ্বংস করা। এ জন্য ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনের নেতৃত্বে মশক নিধন ও লার্ভা ধ্বংসে ক্র্যাশ প্রোগাম পরিচালনা করতে হবে।
দ্বিতীয় উপায় আবহাওয়ার ওপর নির্ভরশীল। ভারি বৃষ্টিপাত হলে স্বচ্ছ পানিতে জন্ম নেয়া এডিস মশার লার্ভা ধুয়ে যাবে। ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে।
আবহাওয়া অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা জানান, চলতি মাসে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। আগামী ৫ ও ৮ আগস্ট ভারি বৃষ্টির কিছুটা সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বর্ষাকাল হিসেবে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। এ ক্ষেত্রে এডিস মশার আরও বংশ বিস্তার ঘটবে বলে ওই কর্মকর্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্যানুসারে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মোট সংখ্যা ১৭ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে জুলাইয়ে আক্রান্ত ও ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। গত কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব জেলাতেই ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, ডেঙ্গুর সুচিকিৎসা নিশ্চিতে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পরীক্ষা ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালেও ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ মুহূর্তে এডিস মশা নিধন ও লার্ভার প্রজননস্থল ধ্বংস করা বেশি প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সিটি কর্পোরেশন প্রচেষ্টা চালাচ্ছ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক পরিচালক রোগতত্ত্ববিদ ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, আগস্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকে। এ বছর ডেঙ্গুর ধরন পাল্টে যাওয়ায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে মশা নিধন ও প্রজননস্থলে এডিস মশার লার্ভা ধ্বংসে অধিক মনোযোগী হতে হবে।
নগরবাসীকে নিজের স্বার্থেই ব্যক্তিগত সতর্কতা অবলম্বন (মশারি টানানো, ফুল হাতা শার্ট ও জামা, হাতে পায়ে মোজা পরিধান ও স্ব উদ্যোগে বাড়ি ঘরের আশেপাশে জমে থাকা স্বচ্ছ পানি পরিষ্কার) করতে হবে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন